মহাকাশ

পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে চলেছে চীনা রকেটের বৃহৎ অংশ

পৃথিবীর দিক ছুটে আসছে চীনা রকেটের ১০০ ফুট লম্বা মূল অভ্যন্তরীণ অংশ (‘কোর’)। এটা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে ভেঙে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে মহাকাশ গবেষণা বিষয়ক নিউজপোর্টাল ‘স্পেসনিউজ’।

চীনের তৈরি এই বৃহত্তম রকেটটির নাম ‘লং মার্চ ৫বি রকেট’। মহাকাশে গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের জন্যই এই শক্তিশালী রকেট বানিয়েছে চীনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। পৃথিবীর কক্ষপথে নিজের দেশের একটি মহাকাশ স্টেশন বানাতে চলেছে চীন। প্রকল্পের নাম- ‘তিয়ানহে মহাকাশ স্টেশন’। তা উৎক্ষেপণের জন্য কিছুদিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। ওই মহাকাশ স্টেশনের একটি ‘মডিউল’ (অংশ) পরীক্ষামূলকভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠাতে গত ২৮ এপ্রিল ‘লং মার্চ ৫বি রকেটের’ উৎক্ষেপণ করেছিল চীনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

‘স্পেসনি‌উজ’ জানাচ্ছে, চীনা রকেটটি সফলভাবে মহাকাশ স্টেশনের ‘মডিউল’ টিকে কক্ষপথে স্থাপন করতে পারলেও নিজেকে আর গ্রাউন্ড স্টেশনের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। ঘুরে চলেছে পৃথিবীর কক্ষপথে। তবে তার ভেতরের ১০০ ফুট লম্বা (৩০ মিটার) অংশটি রকেট থেকে আলাদা হয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে দিন-কয়েকের মধ্যেই ঢুকে পড়তে চলেছে।

মঙ্গলবার চীনা রকেটের ওই অংশটি প্রতি ৯০ মিনিটে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করছিল। এর গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। সেদিন পৃথিবী থেকে এটি ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি উচ্চতায় ছিল।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর কাছাকাছি আসার পরে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এই রকেটের একটি বড় অংশ পুড়ে যাবে, তবে তখনও যথেষ্ট ধ্বংসাবশেষ থাকবে যা মারাত্মক হতে পারে।এই রকেটের এই অংশটি প্রায় ১০০ ফুট লম্বা এবং এটি প্রতি সেকেন্ডে ৪ মাইল গতিতে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে চলেছে।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, রকেট খণ্ডটি প্রায় ৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছিল।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, রকেটের অংশটি জনবসতিপূর্ণ কোথাও আছড়ে পড়লে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি ঘটতে পারে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রোফিজিক্স সেন্টারের বিশেষজ্ঞ জনাথন ম্যাকডোয়েল বলেছেন, এটি সম্ভবত সমুদ্রে পড়তে পারে। রকেটের কিছু টুকরো হয়তো পৃথিবীতে এসে পড়বে। তাতে করে এটি ১০০ মাইল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়া একটি ছোট বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মতো হবে।

এটি আগামী ১০ মে এর দুই দিন আগে বা পরে পৃথিবীতে অবতরণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ম্যাকডোয়েল জানায়, এক বার পৃথিবীতে ফিরে আসার দিনটি স্পষ্ট হয়ে গেলে ঠিক কখন এটি অবতরণ করবে তা ছয় ঘণ্টা আগে অনুমান করা যাবে।

Facebook Comments

Related Articles

Back to top button