অন্যান্য

যে ৭ সফটওয়্যারে দক্ষতা চাকরি পেতে আপনাকে সাহায্য করবে

সিভি বা জীবনবৃত্তান্তের একটা অংশে আমরা অনেক সময় লিখি—কোন কোন সফটওয়্যারের ওপর আমার দখল আছে। অ্যাডোবি নামের প্রতিষ্ঠানটির বানানো গোটা কয়েক সফটওয়্যারের কাজ জানলে আপনি কিন্তু অনেকটা এগিয়ে যাবেন। ডিজিটাল দুনিয়ায় সৃষ্টিশীল কাজের মাধ্যমগুলোর মধ্যে অ্যাডোবিরই রাজত্ব। আজকে অ্যাডোবির কয়েকটি সফটওয়্যারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।

১. অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর

গ্রাফিকসের কাজের উপযোগী সফটওয়্যার হিসেবে অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর বেশ পরিচিত। এক সময় প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই নিজস্ব ফন্ট বানাতে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করত। বর্তমানে নানা রকম কাজে ব্যবহার হয় ইলাস্ট্রেটর। ডিজিটাল অ্যাড, বিলবোর্ড অ্যাড, গ্রাফিক ডিজাইন, প্রিন্ট ডিজাইনসহ ভেক্টর ভিত্তিক যে কোনো ইন্টারফেস নিয়ে কাজ করার জন্য সারা বিশ্বেই অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর ভীষণ জনপ্রিয়। ইলাস্ট্রেটরের কাজ জানা থাকলে চাকরি পেতে সুবিধা তো হবেই, ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অনলাইনেও আপনি প্রচুর কাজ পাবেন।

২. অ্যাডোবি ফটোশপ

ছবি সম্পাদনা এবং সেগুলো ছাপার উপযোগী করার ক্ষেত্রে অ্যাডোবি ফটোশপের জুড়ি নেই। বর্তমানে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই নিজস্ব ছবি/ডকুমেন্টশনকে একটু নান্দনিক রূপ দিতে ব্যবহার করে এটি। তাই যাঁদের ফটোশপের কাজ জানা আছে, চাকরির বাজারে তাঁরা আলাদা গুরুত্ব পাবেন।

৩. অ্যাডোবি প্রিমিয়ার প্রো

প্রিমিয়ার প্রো-এর কাজ মূলত ভিডিও সম্পাদনা। ফোনে কিংবা ক্যামেরায় ধারণ করা যে কোনো ভিডিও সম্পাদনা করা, রং ঠিক করা এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন করে ভিডিওটি তৈরিও করা যায় প্রিমিয়ার প্রো তে। আপনার কাজের ক্ষেত্র যা-ই হোক না কেন, প্রিমিয়ার প্রো জানা থাকলে আপনি কোনো প্রকল্প বা ভাবনাকে ভিডিওর মাধ্যমে আকর্ষণীয়ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন।

৪. অ্যাডোবি আফটার ইফেক্ট

মোশন অ্যানিমেশন বেশ ব্যবহার উপযোগী অ্যাডোবি আফটার ইফেক্ট। অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় বেশির ভাগ কাজ করা হয় এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে। ক্যারেক্টার অ্যানিমেশন, প্রোডাক্ট এক্সপ্লেইন ভিডিও, স্লাইড অ্যানিমেশনসহ নানা রকম মোশন সেট ভিডিও বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয় এটি।

৫. অ্যাডোবি ইনডিজাইন

যে কোনো সাময়িকী, ব্রশিয়ার, ফ্লায়ার, মোট কথা টেক্সট নির্ভর যে কোনো গ্রাফিকস তৈরিতে দুর্দান্ত এই ইনডিজাইন। ছাপাখানা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি তাই সাধারণ প্রতিষ্ঠানে যে কোনো ‘প্রিন্টেড ডকুমেন্ট’ তৈরিতে এর চাহিদা সব সময়-ই এগিয়ে।

৬. অ্যাডোবি এক্সডি

অ্যাডোবি এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইনের সংক্ষিপ্ত রূপ অ্যাডোবি এক্সডি। মূলত কোনো অ্যাপ, ওয়েবসাইট কিংবা ডিজিটাল সেবার ইন্টারফেস ডিজাইনের কাজে এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করা হয়। অ্যাপে কোন বাটন ক্লিক করলে কী আসবে, কোথায় কোন আইকন থাকবে, সব মিলিয়ে ব্যবহারকারীর জন্য সেরা ইন্টারফেস ডিজাইনে সাহায্য করে অ্যাডোবি এক্সডি। ডিজিটাল মাধ্যমে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের সেবা নিয়ে আসছে অ্যাপের মাধ্যমে। তাই অ্যাপে ব্যবহারকারীদের সেরা অভিজ্ঞতা দিতে বাজারে চাহিদা অ্যাডোবি এক্সডিতে দক্ষ ডিজাইনারদের চাহিদা আছে।

৭. অ্যাডোবি ড্রিম ওয়েভার

১৯৯৭ সালে ওয়েবসাইট বানানোর জন্য ডিজাইন ও কোডিং ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন ড্রিমওয়েভার বাজারে আনে ম্যাক্রোমিডিয়া। ২০০৫ সালে অ্যাডোবি ম্যাক্রোমিডিয়া থেকে এটি কিনে নিয়ে নাম দেয় ‘অ্যাডোবি ড্রিম ওয়েভার’। কোনো ওয়েবসাইট বানানোর জন্য যে সকল প্রোগ্রামিং ভাষার প্রয়োজন হয়, তার সবগুলোই ব্যবহার করা যায় ড্রিম ওয়েভারে। ওয়েবসাইটের মূল সার্ভারে কাজ করার আগেই কম্পিউটারের লোকাল সার্ভারেই ডেমো সাইট দেখা যায় এই ডিজাইন টুলসটির সাহায্যে। যা ডিজাইনারকে আগে থেকেই ওয়েবসাইটটি সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে।

অ্যাডোবি আছে মোবাইলেও

ইলাস্ট্রেটর ড্র

মোবাইলেও পাবেন অ্যাডোবির অ্যাপ। যেমন অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর ড্র বেশ জনপ্রিয়। হাতের আঙুল কিংবা স্টাইলাস পেন দিয়ে মোবাইলের পর্দায় নানা রকম নকশা করা যায় ইলাস্ট্রেটর ড্রতে। চটজলদি এঁকে ফেলা যায় যে কোনো কিছু। পরে চাইলে কম্পিউটারে স্থানান্তর করে সেই ডিজাইনে কাজ করা যায়।

অ্যাডোবি স্ক্যান

করোনার এই সময়ে পড়ালেখা চলছে অনলাইনে। হাতে লেখা খাতার ছবি আপলোড করতে গিয়ে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে অনেককেই। তবে পকেটে থাকা ছোট্ট ফোনটিকে স্ক্যানার বানিয়ে ফেলতে বেশ মজার একটি অ্যাপ আছে অ্যাডোবির—অ্যাডোবি স্ক্যান। কাগজের লেখা-আঁকা এই অ্যাপ দিয়ে স্ক্যান করে সহজেই ডিজিটাল ডকুমেন্টে রূপান্তর করতে পারেন। এই অ্যাপে থাকা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আপনার তোলা ছবিকে আরও পরিষ্কার করে একটি ব্যবহার উপযোগী পিডিএফ তৈরি করবে। এ ছাড়া ইংরেজি ভাষার উপাত্ত হলে সেখানে লেখাগুলো আলাদা করে ব্যবহার করার সুবিধাও থাকছে অ্যাডোবি স্ক্যান অ্যাপে।

কোথায় শেখা যাবে

অ্যাডোবির বিভিন্ন সফটওয়্যার ভিত্তিক কোর্স অনলাইনে পাওয়া যাবে। ইউটিউব, ইউডিমাই, টেনমিনিট স্কুল, ঘুড়ি লার্নিং, বহুব্রীহি, ইন্সট্রাক্টরিসহ নানা অনলাইন মাধ্যমে শেখা যাবে সফটওয়্যারগুলোর ব্যবহার। এ ছাড়া ইনস্টিটিউটভিত্তিক অফলাইন কোর্স আছে ক্রিয়েটিভ ইনস্টিটিউট, পাঠশালা, রেড হ্যাটসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের। সরকারি পর্যায়েও লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে কিছু কিছু সফটওয়্যারের কোর্স আছে।

Facebook Comments

Related Articles

Back to top button