যে কারণে হরোর মুভি দেখতে চায় না কিছু মানুষ

কিছু মানুষ হরোর মুভি ভীষণভাবে উপভোগ করে!
আবার কিছু মানুষের জন্য হরোর মুভি দেখা রীতিমত শাস্তি!
কখনও কী ভেবেছেন, দুটো মানুষের মধ্যে এই ধরণের পার্থক্য কেন হয়?
আমাদের মস্তিষ্কের যে অংশটি অনুভূতি ও স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি হচ্ছে অ্যামিগডালা নামে ছোট্ট একটা অংশ। বিপদে পড়লে এ অংশটি আমাদের দুটো অপশন দেয়, হয় লড়াই করো, নয়ত পালাও!
আমরা যখন তীব্র উত্তেজনা নিয়ে কোন হরোর মুভি দেখা শুরু করি, তখন আমাদের দেহের কার্যক্রমে কিছু পরিবর্তন আসতে শুরু হবে। প্রথমত, আ্যামিগডালা অংশটি একসাথে ৩ টি হরমোন ক্ষরণ করে।
আ্যাড্রনালিন, কর্টিসল এবং এপিনেফ্রিন। এ হরমোনগুলোর কারণে সারা দেহে হৃদস্পন্দন এবং রক্ত প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে বেড়ে যায় দেহের বিপাক ক্রিয়ার হার বা মেটাবলিক রেট। আর বিপাক ক্রিয়ার বৃদ্ধিতে দেহ থেকে বার্ন হয় কিছু পরিমাণ ক্যালরি।
কিছু মানুষ দেহের এই পরিবর্তনটি পুরোপুরি উপভোগ করতে পারে। তারা শুধু হরোর মুভি নয়, উপভোগ করে বিভিন্ন দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ড!
যেমন, স্কাই ডাইভিং, বাঞ্জি-জাম্পিং, পাহাড়ে ওঠা, প্রথম চুম্বন ইত্যাদি। মজার বিষয় হচ্ছে, এই ধরণের মানুষেরা ঝাল খেতে খুব পছন্দ করে।
কেননা ঝাল খাবার আমাদের মস্তিষ্কে ঠিক একই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আর যারা হঠাৎ হৃদস্পন্দন বা রক্ত প্রবাহের বৃদ্ধি সহ্য করতে পারেনা, তারা হরোর মুভি বা দুঃসাহসিক কাজগুলোর সম্মুখীন হতে চায় না। কিন্তু তাদেরকে যদি জোরপূর্বক হরোর মুভি দেখানো হয়, সে সময় তাদের দেহটি মস্তিষ্কে বিপরীত বার্তা পাঠাতে শুরু করবে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তাদের মানসিক অবস্থা।
ঠিক একই ঘটনা ঘটে ফোবিয়ার ক্ষেত্রেও। সুতরাং হরোর মুভি ভাল লাগা, না-লাগা নির্ভর করে মস্তিষ্কের সংবেদনশীলতার উপর।
অনেক সময় কিছু দুর্ঘটনার ফলে হঠাৎ মস্তিষ্কের সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়। ফলে প্রচন্ড ভয়কাতর ব্যাক্তিও হয়ে উঠতে পারে দুঃসাহসিক অভিযাত্রী।
কিছু মানুষের বয়স ভেদে সংবেদনশীলতা পরিবর্তন হয়। ফলে কিছুদিন আগে যে ব্যাক্তি হরোর মুভি ভয় পেত, ভবিষ্যতে তা না-ও পেতে পারে।
সর্বোপরি, হরোর মুভি দেখার মানসিকতা, ব্যাক্তির ইচ্ছার উপর নির্ভর করে না। তাই কেউ না চাইলে, তাকে জোর করে হরোর মুভি দেখানো একেবারেই উচিত নয়।