কৃত্রিম বৃষ্টিপাত বা ক্লাউড সিডিং

প্রকৃতির এই বৃষ্টি একসময় মানুষ নিয়ন্ত্রণ করবে… যখন চাইবে বৃষ্টি পাওয়া যাবে,আবার অতিরিক্ত বৃষ্টিতে বিরক্ত??? চাইলে সেটাও রোধ করা যাবে। এই কথা হয়তো একসময় ছিলো আমাদের চিন্তা জগতের বাইরে। কিন্তু বিজ্ঞান একে সম্ভব করে দিয়েছে।
কৃত্রিম বৃষ্টিপাত কি ও এর আবিষ্কারকঃ-
আকাশে ভেসে থাকা বৃষ্টির অনুপযোগী মেঘগুলোকে জোরপূর্বক মাটিতে নামিয়ে আনাই হলো মূলত কৃত্রিম বৃষ্টিপাত। ১৯৪৬ সালে ভিনসেন্ট সেইফার সর্বপ্রথম কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের মূলনীতি আবিষ্কার করেন। এবং ওই বছরের ১৩ই নভেম্বর আরেক নোবেলবিজয়ী বিজ্ঞানী ল্যাংমুর কে সাথে নিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটাতে সফল হোন।
কীভাবে ঘটেঃ-
মূলত রেফ্রিজারেটরের মূলনীতি ব্যবহার করেই কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানো হয়। বৃষ্টির অনুপযোগী মেঘগুলো বৃষ্টি হয়ে মাটিতে ঝরে পরার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘনীভবন। আর এ ঘনীভবনে ব্যবহার করা ড্রাই আইস অথবা সিলভার আয়োডাইড৷ ড্রাই আইসের তাপমাত্র মাইনাস -৭৮ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে থাকে। ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে ভেসে থাকা মেঘের উপর এই ড্রাই আইসের গুড়া ছড়িয়ে দিলেই সেটা ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি হয়ে মাটিতে পরবে৷
ড্রাই আইস বিমানে বা রকেটে করে মেঘের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়৷ তবে বর্তমানে মিসাইল পদ্ধতি অধিক জনপ্রিয়।
উপকারিতা/উদাহরণস্বরূপঃ-
★বিশ্বের সব দেশ মিলিয়ে যতবার কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছে… চীন একাই তারচেয়ে বেশি ঘটিয়েছে। ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক গেমসে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানান আবহাওয়াবিদরা। চীনের বিজ্ঞানীরা অলিম্পিক শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগেই প্রচুর কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে সেই আশংকা নাকচ করে দিয়েছিলো ৷
ভারত অবশ্য চীনকে বৃষ্টিচোর বলে। কারণ ভারতে খড়া বৃদ্ধির কয়েকটা কারণের মধ্যে চীনের অধিক কৃত্রিম বৃষ্টিপাতকেও দায়ী করা হয়।
★ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় এ বছরের জানুয়ারী তে প্রবল বৃটিপাতের ফলে প্রথম ৩দিনেই প্রাণ হারায় ৪৩জন ৷ আবহাওয়াবিদরা বলেন দুসপ্তাহ চলবে এ বৃষ্টিপাত৷ পরে বিজ্ঞানীরা মেঘগুলো জাকার্তায় পৌছানোর আগেই নদীর উপর কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে শতশত মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছিলো।
ক্লাউড সিডিং এখন বিশ্বের অনেক দেশেই ঘটানো হচ্ছে৷ বলাবাহুল্য এ প্রযুক্তি অনেক ব্যয়বহুলও বটে ৷ এজন্য বিজ্ঞানীরা লেজার প্রযুক্তির মাধ্যমে বৃষ্টিপাত ঘটানোর প্রক্রিয়া আবিষ্কারের চেষ্টা করছে৷